নুকু চাকমা
চৈত্র মাস এলেই পাহাড়ে ফোটে নানা ধরণের ফুল। এর মধ্যে ‘বিজু ফুল’ অন্যতম। এই ‘বিজু ফুলে’র স্থানীয় নাম ‘ভাতঝরা’ ফুল। এটিকে চাকমারা ভাতঝরা ফুল বলে। চৈত্রমাসে এ ফুল ফুটলেই বিজুর আমেজ পাওয়া যায়। এ ফুল বনে একসাথে অনেকগুলো ফোটে। দূর থেকে দেখে মনে হয় কেউ যেন ভাত ছিটিয়ে রেখেছে। সেজন্যই এটিকে ভাতঝরা ফুল বলে।
এটা দেখতে অনেকটা রঙ্গন ফুলের মতোই। তবে এটি রঙ্গন নয়। রঙ্গন সারা বছর ফোটে। তবে এই ফুল কেবল চৈত্রমাসেই ফোটে। একটা হালকা গোলাপী আভা এ ফুলের সৌন্দর্যকে বাড়িয়েছে। পাহাড়ের সবচেয়ে বড় সামাজিক উৎসব বিজু। বাংলা বছর বিদায় এবং নতুন বছর বরণ এর জন্য এ উৎসব। বিজুতে এ বিজু ফুল ছাড়া কল্পনা’ই করা যায় না। চাকমাদের কাছে এই উৎসব মোট তিনদিনের। ফুলবিজু, মূল বিজু এবং গোজ্জেপোজ্জ্যে দিন।
বিভিন্ন ছড়া, নদীতে ফুল দিয়ে পুজোর মাধ্যমে বিজু উৎসব শুরু হয। এবং প্রতিটি বাড়িতেও ফুল দিয়ে সাজানো হয়। বিজুফুল ছাড়া ঘরে বিজু উৎসবের আমেজ’ই আসে না। চাকমাদের প্রচলিত বিশ্বাস, ফুল বিজুর দিনে এই ফুলের ঘ্রাণ নিলে রোগ বালাই থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
গাছের প্রতিটি শাখার অগ্রভাগে থোকায় থোকায় বিজু ফুল ফোটে। ফুলগুলো ছোট আকৃতির হয়। প্রতিটি ফুলের পাপড়ি থাকে চারটি। ফুটন্ত ফুল অনেকদিন স্থায়ী হয়।
লেখক: উন্নয়নকর্মী ও নারী অধিকারকর্মী