শুক্রবার, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৪

লামায় মারমা নারীকে ধর্ষণের প্রতিবাদ রাঙামাটিতে

শিজক ডেস্ক
রাঙামাটি: বান্দরবানের লামায় এক মারমা নারীকে ধর্ষণের প্রতিবাদে রাঙামাটিতে মানববন্ধন করেছে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)। সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টায় রাঙামাটি জেলাপ্রশাসক কার্যালয়ের সামনে পিসিপি জেলা শাখা এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। কর্মসূচি থেকে ধর্ষণে জড়িত ব্যক্তিকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে যথাযথ শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে।

পিসিপি রাঙামাটি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক টিকেল চাকমার সঞ্চালনায় ও জেলা শাখার সভাপতি জিকো চাকমার সভাপতিত্বে মানববন্ধনে সংহতি বক্তব্য রাখেন আইনজীবী ও নারীনেত্রী অ্যাডভোকেট সুষ্মিতা চাকমা, পিসিপি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি থোয়াইক্যজাই চাক, পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতি রাঙামাটি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুমিত্র চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশন রাঙামাটি জেলা কমিটির সভাপতি ম্রানু সিং মারমা।

এসময় অ্যাডভোকেট সুস্মিতা চাকমা বলেন, ‘আমাদের দেশে বিশেষ করে কিশোরী ও তরুণীরা একের পর এক ধর্ষণ, জুলুম ও নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। পাহাড়ের নারীরাও তার ব্যতিক্রম নয়। পাহাড়ের নারীরা শিক্ষাক্ষেত্রে, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেসহ সকল ক্ষেত্রে দুর্বল হওয়ার কারণে তারা সব সময় ধর্ষণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছে। এক্ষেত্রে নির্যাতনকারীরা সব সময় সবল হয়, সব সময় ক্ষমতাবান হয়ে তাকে। যারা ক্ষমতাশালী, তারা সবসময় দুষ্কৃতিকারীদের সহযোগিতা করে এবং করে থাকে। যে কারণে অপরাধীরা বারবার এগুলো করার সাহস পাচ্ছে। এযাবৎকালে যতগুলো ধর্ষণের ঘটনা হয়েছে তার মধ্যে কিছু অপরাধের বিচার হলেও অধিকাংশ নারী এখনো যথাযথ বিচার পায়নি।’

পিসিপি’র মানববন্ধনে বক্তব্য রাখছেন আইনজীবী সুস্মিতা চাকমা

তিনি বলেন, “লামায় এলাকাবাসীরা পিটুনি দিয়ে ধর্ষক কায়সারকে আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছে। এরপরও কিভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তাবেষ্টনী ভেদ করে হাসপাতাল থেকে অপরাধী ধর্ষক কায়সার পালিয়ে গেল? আমাদের চৌকস পুলিশ বাহিনী রয়েছে। তারা আন্তরিক থাকলে অপরাধীকে ধরা, তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা কঠিন কিছু নয়। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে দুষ্কৃতিকারীরা উৎসাহ পাবে। এরকম চলতে থাকলে আমরা কেউই নিরাপদে থাকতে পারবো না।”

পিসিপি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি থোয়াইক্যজাই চাক বলেন, “পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রতিবারই ধর্ষণের মতো ঘটনায় আমরা রাজপথে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করেছি। আজও দাঁড়িয়েছি। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে পাকিস্তানি হানাদারদের কর্তৃক ৩০ লাখ শহীদ ও অসংখ্য মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে পাওয়া আজকের স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে কেন আমার বোন নিরাপদে থাকবে না? কেন তারা ঘরের ভেতর ও বাইরে অনিরাপদ থাকবে? কেন তারা ধর্ষণের শিকার হবে?”- প্রশ্ন করেন তিনি।

পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুমিত্র চাকমা বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে একের পর এক পাহাড়ি নারীকে ধর্ষণ করা হচ্ছে, ধর্ষণের পর হত্যা করা হচ্ছে। কিন্ত কোনো সুবিচার পাচ্ছি না। ধর্ষণকারীকে আশ্রয় প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে। যেখানে জনমানুষের সমস্যা হবে সেখানে সকাল-বিকাল ছুটে যাওয়া জনপ্রতিনিধির কাজ। কিন্তু লামার ফাঁসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান ধর্ষককারীর পক্ষে নিয়ে ধর্ষককে সহযোগিতা করে আসছে। এটা তো মেনে নেওয়া যায় না।’

হিল উইমেন্স ফেডারেশন জেলা কমিটির সভাপতি ম্রানু সিং মারমা বলেন, ‘দিনে-দুপুরে নিজ এলাকায় ঘরের পাশে তরকারি খুঁজতে গিয়ে যদি ধর্ষণের শিকার হতে হয়, তাহলে আজকে পাহাড়ি নারীর নিরাপত্তা কোথায়?’

মানববন্ধনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, পিসিপি রাঙামাটি জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক রনেল চাকমা।

গত শুক্রবার বান্দরবানের লামায় ধর্ষণের ঘটনায় সেখানকার ওয়ার্ড মেম্বার ও ইউপি চেয়ারম্যান অপরাধীকে সহযোগিতা করা ও ভুক্তভোগীকে নানাভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পিসিপির। সর্বশেষ গতকাল শনিবার হাসপাতাল থেকে অভিযুক্ত কায়সার পালিয়ে গেছে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। (বিজ্ঞপ্তি)

সম্পর্কিত খবর

সোশ্যাল মিডিয়া

0FansLike
0FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ খবর