শিজক রিপোর্ট
রাঙামাটি: কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরা বন্ধের নির্ধারিত তিন মাস সময়ের মধ্যেও হ্রদে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি না বাড়ায় নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা এক মাস বাড়ানো হয়েছে। বর্ধিত সময়ের মধ্যেও যদি পানি না বাড়ে সেক্ষেত্রে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে হ্রদ ব্যবস্থাপনা কমিটি। বর্ধিত এক মাস সময়েও বিগত তিন মাসের মতো কাপ্তাই হ্রদে সকল প্রকার মাছ ধরা, বাজারজাতকরণ বন্ধ থাকবে।
রোববার (১৬ জুলাই) দুপুরে রাঙামাটি জেলাপ্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ সংক্রান্ত অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বৈঠক সূত্র জানিয়েছে, রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে পানি পর্যাপ্ত পরিমাণ না বাড়ায় করণীয়নির্ধারণে বৈঠক ডাকে কাপ্তাই হ্রদ ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা কমিটি। ২০ এপ্রিল থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত তিন মাস কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরা বন্ধের পর ২০ জুলাই থেকে স্বাভাবিক নিয়মে আহরণ শুরু হওয়ার কথা। তবে হ্রদের পানি পর্যাপ্ত না বাড়ায় ও মাছের পোনার সুষম বৃদ্ধির লক্ষ্যে নিষেধাজ্ঞার সময় আরও এক মাস বাড়িয়ে ১৯ আগস্ট পর্যন্ত করা হয়েছে। তবে এসময়েও যদি পর্যাপ্ত পানি না বাড়ে সেক্ষেত্রে পরবর্তী সিদ্ধান্ত আবার বৈঠক করে নেয়া হবে।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণ সংক্রান্ত এই বৈঠকে কাপ্তাই হ্রদ ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি এবং জেলাপ্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে কাপ্তাই হ্রদ মৎস্য উন্নয়ন ও বিপণনকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো. আশরাফুল আলম ভূঁইয়া, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমা বিনতে আমিন, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) রাঙামাটি নদীউপকেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা লিপন মিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
তবে বৈঠকে জেলা মৎস্য অধিদপ্তর ও ব্যবসায়ীদের কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না।
এক মাস সময় বর্ধিতকরণের বিষয়টি নিশ্চিত করে কাপ্তাই হ্রদ মৎস্য উন্নয়ন ও বিপণনকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো. আশরাফুল আলম ভূঁইয়া বলেন, কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণ বন্ধের সময়ে হ্রদের পানির পরিমাণ ছিল ৭৬ দশমিক ৪০ এমএসএল (মীনস সি লেভেল) আর গতকালের (শনিবার) তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে পানি রয়েছে ৭৫ দশমিক ০৪ এমএসএল। সে হিসাবে বন্ধকালীন সময় থেকে বর্তমানে এক এমএসএল পানি কম রয়েছে। বিশাল কাপ্তাই হ্রদের হিসাবে এই এক এমএসএল পানি অনেক।
তিনি বলেন, ‘এ বছর হ্রদে পানি কম থাকায় ১০ দিন আগেই মাছ আহরণ বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। স্বাভাবিক সময় অনুযায়ী ১৯ জুলাই থেকে মাছ আহরণ শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু হ্রদে পর্যাপ্ত পানি না বাড়ার কারণে এক মাস সময় বর্ধিত করে ১৯ আগস্ট পর্যন্ত সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে।’
উল্লেখ্য যে, প্রতি বছরের ১ মে থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত তিন মাস দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে বড় কৃত্রিম জলাধার কাপ্তাই হ্রদে কার্পজাতীয় মাছের সুষম বৃদ্ধি, হ্রদে মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিতসহ অন্যান্য জীববৈচিত্র্য রক্ষায় হ্রদে মাছ ধরা বন্ধ থাকে। এসময় হ্রদের মাছ বাজারজাতকরণ ও স্থানীয় বরফকলগুলোও বন্ধ থাকে।