শিজক রিপোর্ট
রাঙামাটি: নির্বাচন কমিশন দেশী-বিদেশী কোনো চাপ অনুভব করছে না বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আনিছুর রহমান। সোমবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে রাঙামাটি জেলাপ্রশাসক কার্যালয়ে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই মন্তব্য করেছেন।
নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আনিছুর রহমান বলেন, ‘আমাদের আরও পাঁচদিন আগের হিসাব অনুযায়ী ৫০টা দেশ থেকে ৫০টা অর্গানাইজেশন, আন্তর্জাতিক অঙ্গণ থেকে পর্যবেক্ষকের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আমাদের বিদেশী পর্যবেক্ষকদের আবেদন করার সময় ২৬ নভেম্বর শেষ হয়ে গেছে; এটাকে আমরা ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছি যাতে করে আরও আসুক। আমাদের বক্তব্য হচ্ছে দেশী এবং বিদেশী যত বেশি পর্যবেক্ষক আসবে; ততই আমরা উৎসাহিত করব। তারা দেখুক নির্বাচন কী হচ্ছে। ভালো হচ্ছে কী মন্দ হচ্ছে, দেখে বিশ্লেষণ করুক।’
তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনী পরিবেশের কোনো ঘাটতি আছে বলে আমাদের চোখে পড়ে না। আমরা যে প্রক্রিয়ায় এগিয়ে যাচ্ছি; তার মধ্যে সব কিছুই হচ্ছে। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা না করা নিবন্ধিত ৪৪টা রাজনৈতিক দলের নিজস্ব সিদ্ধান্তের বিষয়; তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কিনা। আমরা তাদেরকে বার-বার ডেকেছি, এই মাসেও ডেকেছিলাম। ৪৪টি দলের মধ্যে ২৬টি এসেছে; ১৮টি দল আসেনি। যারা নির্বাচনে আসছে না তাদেরকে আনার কোনো উপায় তো আমাদের হাতে নেই। নির্বাচন করা না করা তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত। আমরা তাদের বারবার অংশগ্রহণের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। বিভিন্নসময়ে আমরা তাদেরকে ডাকলেও অনেকেই অংশগ্রহণ করেননি, আলোচনায় আসেননি। কেউ নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করা তার ব্যাপার কিন্তু নির্বাচন বানচাল করা কিংবা কাউকে নির্বাচন করতে না দেয়া সেটা কিন্ত তার অধিকার না।’
এদিন সকাল ১১টায় রাঙামাটি জেলাপ্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলার নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে মতবিনিময় সভা নির্বাচন কমিশন। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আনিছুর রহমান। তিন ঘন্টাব্যাপী এই সভা শেষ দুপুর দুইটার পর।
সভায় রাঙামাটির রিটার্নিং অফিসার ও জেলাপ্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান, খাগড়াছড়ির রিটার্নিং অফিসার ও জেলাপ্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান, রাঙামাটির পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ, খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মুক্তা ধরসহ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং অফিসার, জেলা নির্বাচন অফিসার, নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং পুলিশ-বিজিবি’র বিভিন্ন পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভা শেষে ইসি আরও বলেন, ‘আমরা আজকে এখানকার নির্বাচনের প্রস্তুতি ও সমস্যাগুলো শুনেছি। এখানে বিশেষ অঞ্চল হিসেবে সমতলের ভূমির সঙ্গে এখানকার সমস্যাগুলি মেলানো যায় না। তাই এখানকার সমস্যাগুলো জেনে নিলাম এবং বিবেচনা করব। কিছু কিছু বিষয়ে আলোচনার সুযোগ হয়েছে, যেগুলো আমরা কমিশনে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানাব। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করার জন্য আমরা সারাদেশে ঘুরে বেড়াচ্ছি। কোনো রকমের পক্ষপাতমূলক আচরণ করা যাবে না। নিরাপত্তাহীনতার প্রশ্নের সম্মুখীন হওয়া যাবে না এবং সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য যা যা করণীয় সার্বিক বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে ‘অবৈধ অস্ত্র’ উদ্ধার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলা আছে। বলা হয়েছে আপনারা অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের কার্যক্রমও করবেন পাশাপাশি বৈধ অস্ত্রেরও যেনো অবৈধ ব্যবহার না হয় সেদিকেও নজরদারি বাড়াতে হবে, ব্যবস্থা নিতে হবে।’
নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন প্রসঙ্গে বলেন, ‘অতীতের সকল জাতীয় নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন হয়েছে, এবারও আমাদের সারাদেশে সেনাবাহিনী মোতায়েন করার পরিকল্পনা রয়েছে, আমরা মোতায়েন করব। এখানে তো (পাহাড়ে) বিশেষ অঞ্চলে হিসাবে সেনাবাহিনী আগে থেকেই আছে, এখানে কৌশলগত বিষয়গুলো আগে থেকেই করা হয় নতুন করে কিছু করা লাগবে না।’