শুক্রবার, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৪

জলে ভাসল মঙ্গল কামনার ফুল

শিজক রিপোর্ট
রাঙামাটি: কাপ্তাই হ্রদের জলে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে ফুল বিজু উদযাপন করেছে চাকমা জনগোষ্ঠীর মানুষেরা। এছাড়া মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যাসহ অন্য জনগোষ্ঠীর তরুণ-তরুণী, নর-নারীরাও ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে এই উৎসব উদযাপন করছেন। মঙ্গল কামনা করেছেন পৃথিবী ও মানুষের জন্য। পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রধান এই সামাজিক উৎসবের মূল উৎসব শুরু হয় নদীতে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়েই। জলে ফুল ভাসিয়ে গঙ্গা দেবীর কাছে মঙ্গল কামনা ও কৃতজ্ঞতা জানায় সকলে। পাহাড়ি জনপদের এই সামাজিক উৎসবে এখন ব্যস্ত হয়ে পড়েছে শহর, নগর আর পাহাড়ি পল্লীগুলো।

স্থানীয় অধিবাসীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২৯ চৈত্র বুধবার চাকমা জনগোষ্ঠীর ‘ফুল বিজু’, ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর ‘হাঁড়িবসু’ আর মারমা সম্প্রদায়ে ‘সূচিকাজ’। ফুলবিজু নামে অভিহিত না হলেও এইদিন প্রায় সকল পাহাড়ি জাতিগোষ্ঠী পানিতে ফুল ভাসিয়ে দেয়। এদিকে, আজ বুধবার সকাল ৭টায় ফুলবিজু উপলক্ষে শহরের রাজবন বিহার ঘাট, গর্জনতলী, কেরাণী পাহাড়সহ বিভিন্ন এলাকায় পানিতে ফুল ভাসিয়ে এই উৎসব উদযাপন করেছেন পাহাড়িরা।

আরও পড়ুন: পাহাড়ের বিজু উৎসব

পানিতে ফুল ভাসিয়ে পুরনো বছরের দুঃখ বেদনা ভাসিয়ে দিয়ে নতুন দিনের সম্ভাবনার আলো জ্বালায় পাহাড়ের মানুষ। পানিতে ফুল ভাসিয়ে পুরনো দিনের বেদনা ভুলে নতুন দিনের প্রত্যয়ের কথা জানায় ফুল ভাসাতে আসা পাহাড়ি তরুণ-তরুণীরা। ফুল ভাসানোর পর বাড়িতে গিয়ে বয়োজ্যেষ্ঠদের স্নান করান তরুণ-তরুণীরা।

 

বিজু, সাংগ্রাই, বৈসু, বিষু, বিহু, সাংক্রান-২০২৩ উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ইন্টু মনি তালুকদার বলেন, সকাল ৭টায় রাজবন বিহার থেকে র‌্যালি নিয়ে আমরা বিহারের ঘাটে এসে গঙ্গা দেবীকে নিবেদন করে ফুল ভাসিয়েছি। ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে আমরা চাকমারা পুরনো বছরকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানাই।

প্রসঙ্গত, উৎসবপ্রিয় পাহাড়িরা সারা বছর মেতে থাকেন নানান অনুষ্ঠানে। তবে তার সবকিছুকে ছাপিয়ে যায় বর্ষবিদায়ের এই উৎসব। চাকমারা বিজু, ত্রিপুরা বৈসুক, মারমারা সংগ্রাই, তঞ্চঙ্গ্যারা বিষু, অহমিয়ারা বিহু এভাবে তারা ভিন্ন ভিন্ন নামে আলাদাভাবে পালন করে এই উৎসব। উৎসবের প্রথম দিনে চাকমা, ত্রিপুরা ও মারমারা বন থেকে ফুল আর নিমপাতা সংগ্রহ করে এবং পবিত্র এই ফুল ভাসিয়ে দেয় পানিতে, তাই চাকমারা একে বলা হয় ফুল বিজু। পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর মধ্যে বাংলা বর্ষকে বিদায় জানানোর এ অনুষ্ঠান তাদের প্রধান সামাজিক উৎসব হিসেবে বিবেচিত।

সম্পর্কিত খবর

সোশ্যাল মিডিয়া

0FansLike
0FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ খবর