শিজক রিপোর্ট
রাঙামাটি: জেলার লংগদু উপজেলায় স্যুট কবুলিয়ত নামে দলিল জালিয়াতির (খতিয়ান) অভিযোগে কামাল হোসেন (৪০) নামে এক সার্ভেয়ারসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) দুপুরে অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাহাব উদ্দিনের আদালতে লিগ্যাল এইড অফিসের মাধ্যমে পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করলে বিচারক এজাহার হিসেবে গ্রহনের জন্য লংগদু থানার ওসি’কে নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, পৃথক দুইটি মামলায় একই আসামি হলেও বাদী দুইজন। আদালত দুইটি আলাদা অভিযোগকে এজাহার হিসেবে গণ্য করে মামলাটি গ্রহণ করেছেন। একটি মামলার বাদী সূর্য্য বানু (৭২) আরেকটি মামলার বাদী শাহানাজ বেগম (৪৬)।
মামলার আসামিরা হলেন- লংগদু উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার কামাল হোসেন (৪০), আলী আকবর (৪৬), মো. লিটন (৩০), মুক্তা (৩২), বিলকিস বেগম (৪৮) ও মো. ইব্রাহিম (২৫)। আসামি ও বাদী সকলেই উপজেলার বগাচত্বর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড পেটান্যামাছড়ার বাসিন্দা।
এক বাদীর এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, সার্ভেয়ার কামাল হোসেন ২ নম্বর আসামির মাধ্যমে স্যুট কবুলিয়ত নামে জীবিত ও মৃত ব্যক্তির সই জাল করে মোটা অংকের টাকা গ্রহণ করে থাকে। ২০২২ সালের ২৪ জুলাই চার একর জমির একটি জাল খতিয়ান ৩-৬ নম্বর আসামিগণ বরাবরে প্রদান করে। এ ঘটনায় বাদী পরবর্তীতে সহকারী কমিশনার ভূমি বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগের পরে ১ ও ২ আসামি তাদেরকে ১ লাখ ২০ টাকা প্রদান করলে ৩-৬ নম্বর আসামিগণের মত করে আরও একটি খতিয়ান তৈরি করে বাদীকে প্রদান করবেন বলেন।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, ২ নম্বর আসামির সহযোগিতায় ৩-৬ নম্বর আসামি তাদের মৃত বাবাকে জীবিত দেখিয়ে ১ নম্বর আসামির অফিস হইতে জালভাবে তৈরি খতিয়ান তৈরিন করেন এবং জাল খতিয়ানটি সরকারি অফিসসহ বিভিন্ন স্থানে ব্যবহার করেন। সার্ভেয়ার কামাল হোসেন লংগদু উপজেলায় আনুমানিক শতাধিক মিথ্যা, জাল খতিয়ান তৈরি করে মোটা অংকের টাকা গ্রহন করেছে।
মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে বাদীপক্ষ ও লিগ্যাল এইডের প্যানেল আইনজীবী অ্যাডভোকেট শফিউল আলম মিঞা বলেন, ‘স্যুট সবুলিয়তের নামে লংগদু ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার বিভিন্নজনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে জাল দলিল সরবরাহ করে থাকে। পার্বত্য চট্টগ্রামে এলাকায় ব্যক্তি পর্যায়ে জমি রেকর্ড কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও তিনি (সার্ভেয়ার) এই অনিয়ম করে যাচ্ছেন। যার কোনো রেকর্ড সংশ্লিষ্ট কোনো অফিসে নেই। আসামিদের হয়রানি শিকার দুইজন ভুক্তভোগী আদালতে মামলা করেছেন। বিজ্ঞ আদালত মামলা দুটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করে লংগদু থানার ওসিকে রিপোর্ট দিতে বলেছেন। পুরো উপজেলার ৪০০-৫০০ জন ভুক্তভোগী এই হয়রানির শিকার হয়েছেন।’