শুক্রবার, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৪

দুই মাসে ৩,৯১০ টন মাছ আহরণ কাপ্তাই হ্রদে

শিজক রিপোর্ট
রাঙামাটি: কৃত্রিম জলাধার কাপ্তাই হ্রদে চার মাস ১২ দিনের নিষেধাজ্ঞার পর ১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছে মাছ আহরণ। মৌসুমের প্রথম দুই মাস অর্থাৎ সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে ৩ হাজার ৯১০ টন মাছ আহরণ করা হয়েছে। এর বিপরীতে বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) রাজস্ব পেয়েছে ৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা। গত বছর একই দিন পর্যন্ত মাছ আহরণ করা হয় ৩ হাজার ১৪৭ টন, যা থেকে ৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হয়। মাছ আহরণ বাড়ার কারণে গত বছরের চেয়ে এবার অক্টোবর পর্যন্ত ২৫ শতাংশ রাজস্ব আদায় বেড়েছে।

কাপ্তাই হ্রদ মৎস্য উন্নয়ন ও বিপণন কেন্দ্রের রাঙামাটি শহরের প্রধান বিপণন কেন্দ্র ছাড়াও জেলার কাপ্তাই, মারিশ্যা ও খাগড়াছড়ির মহালছড়িতে তিনটি উপকেন্দ্র রয়েছে। এসব বিপণন কেন্দ্রে অবতরণ করা মাছের মধ্যে বেশির ভাগই কাঁচকি, চাপিলাসহ অন্য ছোট প্রজাতির মাছ। সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে অবতরণ করা মাছের ৯৩ শতাংশ ছোট প্রজাতির। বাকি ৭ শতাংশ পাওয়া গেছে কার্পসহ অন্যান্য বড় মাছ।

তবে বিপণন কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের দাবি, অন্যান্য বছরের চেয়ে চলতি মৌসুমে বড় মাছ বেড়েছে। অন্যান্য মৌসুমে ৪-৫ শতাংশ বড় মাছ পাওয়া গেলেও এবার ৭ শতাংশ বড় মাছ পাওয়া গেছে।

কাপ্তাই হ্রদ মৎস্য উন্নয়ন ও বিপণন কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো. আশরাফুল আলম ভূঁইয়া বলেন, ‘রোববার পর্যন্ত ৩ হাজার ৯১০ টন মাছ অবতরণ করা হয়েছে। গত বছর একই দিন পর্যন্ত অবতরণ করা হয় ৩ হাজার ১৪৭ টন; এ পরিমাণ মাছ থেকে ৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হয়। সে হিসাবে গত বছরের চেয়ে এবার ২৫ শতাংশ রাজস্ব আদায় বেড়েছে।’

মৎস্যজীবীরা বলছেন, চলতি আহরণ মৌসুমের শুরুর দিকেই কাপ্তাই হ্রদে ভরপুর পানি আছে। যার সুফল পাওয়া যাবে মৌসুমজুড়েই। গত কয়েক বছর পানিস্বল্পতার মধ্যে হ্রদে মাছ আহরণ শুরু হয়। এর ফলে মৌসুমের শেষ দিকে আহরণে ভাটা পড়ে। তবে এবার সেই আশঙ্কা না থাকায় মাছ উৎপাদন বাড়তে পারে।

রাঙামাটি জেলা মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক উদয়ন বড়ুয়া বলেন, ‘গত কয়েকটি মৌসুমের চেয়ে চলতি মৌসুমে কাপ্তাই হ্রদে মাছ ভালো পাওয়া যাচ্ছে। আগের তুলনায় এবার মাছ আহরণ বেড়েছে। এ বছর হ্রদে মাছ আহরণ বন্ধ ছিল সাড়ে চার মাসের মতো। এখন হ্রদে পর্যাপ্ত পানি থাকায় বিভিন্ন ঘোনায় মাছ ছড়িয়ে যেতে পেরেছে। আমরা আশাবাদী, চলতি মৌসুমের শেষ দিকে আহরণে ভাটা পড়বে না।’

প্রায় ৬৮ হাজার ৮০০ হেক্টর আয়তনের জলাধার কাপ্তাই হ্রদ এখন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় স্বাদু পানিতে মাছ চাষের বৃহৎ ক্ষেত্র। মূলত জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে এ হ্রদের সৃষ্টি হলেও এটি এখন মাছ উৎপাদনে ভূমিকা রেখে আসছে।

মৎস্য অধিদপ্তরের হিসাবে, রাঙামাটির আট ও খাগড়াছড়ির দুই উপজেলার সাড়ে ২৬ হাজার নিবন্ধিত জেলে কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণের ওপর জীবিকা নির্বাহ করে। যদিও নিবন্ধিত জেলে তালিকা নিয়েও রয়েছে অনিয়মের অভিযোগ।

সম্পর্কিত খবর

সোশ্যাল মিডিয়া

0FansLike
0FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ খবর