বুধবার, নভেম্বর ১৩, ২০২৪

পার্বত্য অঞ্চলে অর্থকরী ফসল, ফলমূল-শাকসবজি সবই উৎপাদন হবে: কৃষি মন্ত্রী

প্রান্ত রনি, শিজক রিপোর্ট
রাঙামাটি: কৃষি মন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, অর্থকরী ফসল, ‘ফলমূল-শাকসবজি সব কিছুই পার্বত্য অঞ্চলে উৎপাদন হবে। তবে কৃষক আর মাঠ কর্মীরা চাইলেই কেবল হবে না, এর জন্য সুপরিকল্পিত পরিকল্পনা নিতে হবে। পর্যাপ্ত বরাদ্দ দিতে হবে। এতে করে পার্বত্য জেলার মানুষ আর গরীব থাকবে না।’

বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) বিকালে রাঙামাটি জেলা শহরের শাহ্ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের হলরুমে কৃষক-কৃষাণী ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষি মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘এখানে পানি সংকটের কথা বলা হলেও আমি মনে করি সার্ভে করলে ভালো পানি পাওয়া যাবে। এছাড়া এখানে বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে, বৃষ্টির পানি, ছড়ার পানি ধরে রাখতে পারলে পানি সংকট থাকবে না। পার্বত্য চট্টগ্রামে সমন্বিত কৃষি উন্নয়নের জন্য আমরা প্রকল্প গ্রহণ করব। কৃষির এই সময়ে সফলতার শেষ নেই। পার্বত্য চট্টগ্রামে কোনো পদ খালী থাকবে না ‘

‘পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে সম্ভাবনায় কাজু বাদাম ও কফি আবাদা, সম্প্রসারণ এবং বিভিন্ন জাতের ফলসহ টেকসই ফসলের আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধি’ শীর্ষক এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় পাহাড়ি অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার কৃষক-কৃষানীরা অংশগ্রহণ করেছেন।

মানুষের ‘রুচি বেড়েছে’ মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের রুচি বেড়েছে। মানুষ এখন ২০ টাকা খরচ করেও সান ফ্লাওয়ার ক্ষেতে গিয়ে ছবি তোলেন। এছাড়া দেশে সরিষার ফলন আমাদের এবছর অন্যান্য বছরের চেয়ে অনন্য। কৃষি ক্ষেত্রে অনেক সফলতার কাঠি আমি তুলে ধরতে পারি। কৃষির জন্য পাহাড়ি এলাকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এখানে সবই হয়।’

সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে মন্ত্রণালয় পাহাড়ি এলাকায় কফি ও কাজু বাদাম চাষের জন্য ৪০ কোটির প্রকল্প নেয়া হয়েছে। স্বল্প বরাদ্দ হলেও এই প্রকল্পে তিন পার্বত্য জেলার ১২টি উপজেলায় আমাদের উদ্যোগে রয়েছে। আপাতত চারটি উপজেলাকে আওতায় এনেছি। ফলের দিক থেকে তিন পার্বত্য জেলা প্রসিদ্ধ। বাংলাদেশে পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষ ফলন উৎপাদনে আস্থার খুঁটি। কফি ও কাজুবাদাম সারাবিশ্বেই ব্যবহার হয়। কৃষকরাই হলেন দেশের মেরুদণ্ড। তাই কৃষকদের উন্নয়ন না হলে আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ কিভাবে হবো? পার্বত্য চট্টগ্রামে হয়না এমন কোনো কিছু নেই।’

মতবিনিময় সভায় রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুই প্রুর চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং, খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও রাঙামাটি সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমা।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তার, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের (ডিএই) মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর, জেলাপ্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান ও পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ প্রমুখ।

হর্টিকালচার সেন্টার বান্দরবানের উপপরিচালক আমিনুর রশিদের সঞ্চালনায় এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডিএই রাঙামাটি অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক তপন কুমার পাল। বক্তব্য রাখেন কৃষক অমলেন্দু চাকমা, আয়ুব আলী ও লিপি চাকমা।

এসময় কৃষকরা জানান, পাহাড়ি এলাকায় চাষাবাদের বড় সমস্যা পানি বা সেচ সংকট। সেচ ব্যবস্থাপনা সংকট ও পানি না থাকায় তাদের চাষাবাদে অনেক দুর্ভোগ পোহাতে। তবে এক কৃষকের কথা শুনো পার্বত্য মন্ত্রী সেই কৃষকদের এলাকায় রাবার ড্যাম কিংবা ঝিরি-ছড়া থেকে পানি সংরক্ষণ করার সুযোগ আছে কীনা- জানতে চেয়েছেন।

এর আগে সকালে কৃষি মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক জেলার নানিয়ারচর উপজেলায় ভার্মি কমপোস্ট, সূর্যমুখী ক্ষেত, মাল্টা, আনারস, কাজু বাদাম ও কফি বাগান পরিদর্শন করেছেন।

দুপুরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর (ডিএই) রাঙামাটি অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালকের কার্যালয়ে কৃষি আবহাওয়া রেডিও উদ্বোধন করেন।

সম্পর্কিত খবর

সোশ্যাল মিডিয়া

0FansLike
0FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ খবর