শিজক রিপোর্ট
পাহাড়ের শিক্ষার ‘বাতিঘর’ ও ‘শান্তি নিকেতন’ হিসেবেখ্যাত অনাথ, দরিদ্র, ছিন্নমূল শিশুদের অন্যতম আশ্রয়স্থল রাঙামাটির মোনঘর আবাসিক উচ্চ বিদ্যালয়ে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ উপলক্ষে আজ শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকালে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
মোনঘর ক্যাম্পাসে ‘দি মনোঘরীয়ান্সে’র উদ্যোগে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন মোনঘর শিশু সদন পরিচালনা কমিটির সভাপতি শ্রদ্ধালংকার মহাস্থবির। দি মনোঘরীয়ান্সে’র সভাপতি শ্যামল মিত্র চাকমার সভাপতিত্বে এতে প্রধান আলোচক ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর মংসানু চৌধুরী। বিশেষ আলোচক ছিলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য বাঞ্চিতা চাকমা, মোনঘর আবাসিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিশির চাকমা।
অনুষ্ঠানের শুরুতে তুর্কী ও সিরিয়ায় ভূমিকম্পে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন দি মনোঘরীয়ান্সের সহ-সভাপতি লালন কান্তি চাকমা। এছাড়া অনুষ্ঠানে বিদায়ী শিক্ষকরা তাদের শিক্ষকতা জীবনের স্মৃতিচারণ করেন। অনুষ্ঠান শেষে মোনঘর আবাসিক উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত ১৯ জন শিক্ষককে বিদায় সংবর্ধনা হিসেবে সন্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। বিকালে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হবে।
অনুষ্ঠানে আলোচকরা বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের ১১টি পাহাড়ি জাতিসত্বার দরিদ্র ও অনাথ শিশুদের অন্যতম আশ্রয়স্থল ও শিক্ষার বাতিঘর হচ্ছে মোনঘর শিশু সদন। পাহাড়ে পিছিয়ে পড়া দরিদ্র শিশুদের পড়ালেখা করে আলোকিত মানুষ গড়ার কাজ করে যাচ্ছে মোনঘর। এরই ধারাবাহিকতায় মোনঘর থেকে লেখাপড়া করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পেশাগত দক্ষতা দেখিয়ে মোনঘরসহ দেশের নাম উজ্জ্বল করছে।’
রাঙামাটিতে অবস্থিত সবুজ ছায়ায় ঘেরা মোনঘর শিশুসদনটি প্রায় একশ একর পাহাড়ের ওপর অবস্থিত। ১৯৭৪ সালে পাহাড়ি সমাজে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েই একুশে পদকপ্রাপ্ত ধর্মীয় গুরু শ্রীমৎ জ্ঞানশ্রী মহাথেরো ভিক্ষুর নেতৃত্বে শ্রীমৎ বিমলতিষ্য মহাথেরো, শ্রীমৎ প্রজ্ঞানন্দ মহাথেরো ও শ্রীমৎ শ্রদ্ধালংকার মহাথেরো মোনঘর পরিচালনার দায়িত্ব নেন। এটি প্রতিষ্ঠার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো পার্বত্য চট্টগ্রামের সুবিধাবঞ্চিত গরিব, এতিম ও দুস্থ শিশুদের জন্য নিরাপদ আশ্রয় এবং শিক্ষা নিশ্চিত করা। এ পর্ষন্ত এ প্রতিষ্ঠান থেকে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও দেশের বাহিরে কর্মরত আছেন।