প্রান্ত রনি, শিজক রিপোর্ট
রাঙামাটি: জেলা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সার্জেন্ট মো. ইব্রাহিম মিয়াকে আইন ও বিধিমালা বহির্ভূত উপায়ে মোটরসাইকেল আটকের অভিযোগে ২৪ ঘন্টার মধ্যে সশরীরে হাজির হয়ে লিখিত কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আজ রোববার (২৮ মে) দুপুরে রাঙামাটির অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাহাব উদ্দিনের আদালত ট্রাফিক সার্জেন্টকে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে লিখিত কারণ দর্শাতে বলেছেন।
ভুক্তভোগী মোটরসাইকেল মালিকের আবেদনপত্র ও অন্যান্য নথিপত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গত ২৫ মে (বৃহস্পতিবার) দুপুরে পুলিশ সার্জেন্ট মো. ইব্রাহিম মিয়া রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার লগগেইট এলাকা থেকে মোটরসাইকেল মালিক ও আবেদনকারী শ্যামল বিকাশ চাকমার রেজিস্ট্রেশনবিহীন মোটরসাইকেলটি রূপান্ত চাকমা নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে চালানোর আটক করে। একইসঙ্গে আগামী ৪ জুনের পূর্বে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ট্রাফিক সার্জেন্ট সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এর ১১২ ধারার বিধান মোতাবেক মোটরসাইকেলটি হেফাজতে নিলেও সড়ক পরিবহন বিধিমালা ২০২২ এর ১৬৩ বিধির অধীন কোনো ধরণের জব্দ তালিকা প্রস্তুতপূর্বক আটককৃত মোটরযান এখতিয়ারাধীন আদালতে প্রেরণ করেননি। ১৬৩ বিধিতে বলা আছে, মোবাইল কোর্ট ব্যতীত পুলিশ কর্তৃক আটককৃত মোটরযানের জব্দ তালিকা ২৪ ঘন্টার মধ্যে এখতিয়ারাধীন আদালতে দাখিল করতে হবে।
আদালতের আদেশে বলা হয়েছে, বিধান থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘ ৭২ ঘন্টা অতিক্রান্ত হলেও মোটরসাইকেল আটককারী ট্রাফিক সার্জেন্ট মো. ইব্রাহিম মিয়া জব্দ তালিকা প্রস্তুতপূর্বক বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করেননি; যা সুনির্দিষ্টভাবে আইনের লঙ্ঘন মর্মে প্রতীয়মান। আদেশে ট্রাফিক সার্জেন্টের বিরুদ্ধে কেন বিধিমোতাবেক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে না; এই বিষয়ে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে বিজ্ঞ আদালতে সশরীরে হাজির হয়ে লিখিত কারণ দর্শানোর নির্দেশ করা হলো। এছাড়া আটককৃত মোটরসাইকেলটি বিধিমোতাবেক দরখাস্তকারীর জিম্মায় প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এদিকে, আদালতে আবেদনকারীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট রাশেদ ইকবাল শিজক ডটকমকে বলেন, আইনে মোটরসাইকেল আটকের পর ২৪ ঘন্টার মধ্যে আদালতে জব্দ তালিকা প্রেরণের নির্দেশনা থাকলেও ট্রাফিক সার্জেন্ট দীর্ঘ ৭২ ঘন্টা পরও জব্দ তালিকা প্রেরণ করেননি। বিজ্ঞ আদালত মোটরসাইকেল মালিকের আবেদনের প্রেক্ষিতে আইন লঙ্ঘন করার কারণে বিধিমোতাবেক ট্রাফিক সার্জেন্টের বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না- এই মর্মে সশরীরে লিখিত কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে দরখাস্তকারীর জিম্মায় বিধিমোতাবেক মোটরসাইকেলটি প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন।