শুক্রবার, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৪

রাঙামাটি জাপায় ‘গৃহদাহ’, পাল্টাপাল্টি দোষারোপ

শিজক রিপোর্ট
রাঙামাটি: সারা বছরই জেলার রাজনীতিতে আলোচনার বাহিরে থাকা রাঙামাটি জাতীয় পার্টিতে গৃহদাহ শুরু হয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাঙামাটি আসনে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা ও প্রত্যাহারকে কেন্দ্র করে দেখা দিয়েছে গৃহদাহ।

২৯৯ নম্বর রাঙামাটি আসনে জাপার জেলা সভাপতি মো. হারুনুর রশিদ ওরফে হারুন মাতব্বরকে দলীয় মনোনয়ন দেয় দলের মনোনয়ন বোর্ড। তবে মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষদিন ‘ব্যক্তিগত ও পারিবারিক’ কারণ দেখিয়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন হারুন মাতব্বর। মনোনয়ন প্রত্যাহারের পরদিনই দলীয় অফিসে সংবাদ সম্মেলন ডেকে হারুন মাব্বতরকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করে নেতাকর্মীরা। এবার পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেছেন হারুন মাতব্বরও।

শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে মনোনয়ন প্রত্যাহার করাকে কেন্দ্র করে জেলার ‘সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদে’ সংবাদ সম্মেলন করেছে রাঙামাটি জেলা ও উপজেলার জাতীয় পার্টি। তবে জাপার এই সংবাদ সম্মেলনে অনুষ্ঠিত হয়েছে রাঙামাটি চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সম্মেলন কক্ষে। সারা বছর আলোচনার বাহিরে থাকা রাঙামাটি জাপা ঘুরছে এখন দোষারোপের বৃত্তে।

এসময় লিখিত বক্তব্যে জাপা থেকে দলীয় মনোনয়ন পাওয়া ও রাঙামাটি জেলা জাপার সভাপতি মো. হারুনর রশিদ বলেন, ‘দলীয় হাই-কমান্ডের সঙ্গে আলোচনা করেই মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বিষয়টি নিজ দলীয় কিছু ব্যক্তি অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে টাকার বিনিময়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে। যা দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী।’

এসময় অপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে দলীয় বব্যস্থা গ্রহণের পাশাপাশি আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণেরও হুঁশিয়ারি দেন হারুন।

সংবাদ সম্মেলনে জেলা জাপার সাধারণ সম্পাদক প্রজেশ চাকমাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তবে সংবাদ সম্মেলনে এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার কথা জানালেও কাকে সমর্থন দিচ্ছে রাঙামাটি জাপা- এই প্রসঙ্গে কিছুই জানানো হয়নি। জেলা জাপা সভাপতি জানান, ‘আমরা ভোটকেন্দ্রে যাব, তবে কাউকে আনুষ্ঠানিকভাবে সমর্থন দেওয়া হয়নি। যে যার মতো করে ভোট দিতে পারবেন।’

প্রসঙ্গত, রাঙামাটি জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি হারুনুর রশিদ ওরফে হারুন মাতব্বর জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মুছা মাতবরের বড় ভাই।

এর আগে, গত ১৭ ডিসেম্বর ‘ব্যক্তিগত ও পারিবারিক’ কারণ দেখিয়ে শেষ দিন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পরদিন (১৮ ডিসেম্বর) শহরের কাঠালতলীর দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে দলের নেতাকর্মীরা। সংবাদ সম্মেলনে দলের সঙ্গে আলোচনা না করে মনোনয়ন প্রত্যাহার করার অভিযোগে সভাপতি হারুনুর রশিদকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে নেতাকর্মীরা বলেন, ‘জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন নিয়ে হারুনুর রশিদ জেলার জাতীয় পার্টিসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কোনো নেতাকর্মীর সঙ্গে আলাপ আলোচনা না করে হুট করে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন। প্রার্থী হওয়ার সময় দলের সবাইকে নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন। কিন্তু প্রার্থিতা প্রত্যাহার করার সময় দলের কেউ জানেন না। হারুনুর রশিদ তার প্রত্যাহার কাগজে লিখেছেন ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণ। কিন্তু দলীয় সিদ্ধান্তে মনোনয়ন পেয়ে ব্যক্তিগতভাবে প্রত্যাহার করেন কিভাবে?’

ওই সংবাদ সম্মেলনে জেলা জাপার সিনিয়র সহ-সভাপতি আরফান আলী, জ্যোতি বিকাশ চাকমা, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম মিন্টু, চন্দন বড়ুয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, মির্জা মাসুদ রানা, জেলা যুবসংহতির সভাপতি সুকুমার চন্দ্র রায়, সহ-সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ তালুকদার, মহিলা পার্টির সিনিয়র সহ-সভাপতি স্বপ্না ত্রিপুরাসহ আরও অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত খবর

সোশ্যাল মিডিয়া

0FansLike
0FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ খবর