প্রান্ত রনি, শিজক রিপোর্ট
রাঙামাটি: পার্বত্য শহর রাঙামাটিতে যাঁরাই থাকেন, তাদের সবাই না হলেও বেশির ভাগ মানুষই তাঁকে চেনেন কিংবা দেখেছেন। কখনো লাঠি দিয়ে যানবাহন সচলের কাজে; কিংবা কখনো ফুঁ দিয়ে বাঁশি বাজাতে। তবে মানুষ হিসেবে বাকপ্রতিবন্ধী হলেও জনগণকে সেবা দিতে তাঁর প্রাণান্ত প্রচেষ্টা। দীর্ঘদিন ধরেই ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে চলছে তাঁর জনসেবা।
বলছি রাঙামাটির শহরের প্রাণকেন্দ্র বনরূপা মোড়ে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে সড়কে যানবাহনে চলাচলে সহায়তাকারী মোহাম্মদ শাহিনের কথা। দীর্ঘ সময় ধরেই সে ট্রাফিক পুলিশের কাজে সহযোগিতা করে আসছেন। কখনো কখনো ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে কিছু খেতে দেন, কখনো দেন টাকা-পয়সাও। কিন্তু তাঁর স্বেচ্ছাশ্রমের জন্য কখনোই চান না পারিশ্রমিক।
কথায় আছে, পরিশ্রমই মানুষকে মানুষের মাঝে বাঁচিয়ে রাখে, দেয় কাজের স্বীকৃতি। তেমনই এক ঘটনার উদাহরণ হলেন কারো কারো কাছে নামে অচেনা; বহুজনের দেখাদেখিতে চেনা পরিচিত যুবক মোহাম্মদ শাহিন। সোমবার দুপুরে (১৭ জুলাই) নিজ কার্যালয়ে ট্রাফিক পুলিশের কাজে সহয়তাকারী শাহিনকে কাজের স্বীকৃতি দিয়েছেন রাঙামাটির পুলিশ সুপার (এসপি)।
পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ বলেছেন, “বাকপ্রতিবন্ধী যুবক মোহাম্মদ শাহিনকে অর্থ সহায়তা করার চেয়ে তাঁর কাজের স্বীকৃতি দিতে পেরে আমাদের নিজেদেরও ভালো লাগছে। টাকা হিসাবে ৫ হাজার টাকা খুব বেশি পরিমাণ অর্থ না হলেও আমরা মনে করি তাঁকে জনসেবা করতে এই স্বীকৃতি আরও উদ্বুদ্ধ করবে।” এসপি বলেন, “বাকপ্রতিবন্ধী হলেও সে সমাজে আমাদের সকলেরই মতোই একজন মানুষ। আমরা মনে করি এই স্বীকৃতিতে সে অনুপ্রেরণা পাবেন এবং নিজেকে সমাজের চোখে বোঝা হিসেবে ভাববেন না।”
শাহিনের সর্ম্পকে জানতে চাইলে রাঙামাটি ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক (টিআই) সারোয়ার মোহাম্মদ পারভেজ বলেন, “শাহীন একজন বাকপ্রতিবন্ধী হলেও সে আমাদের সব সময় সহযোগিতা করে আসছে। সপ্তাহের প্রায় দিন’ই বনরূপা মোড়ে সে (শাহিন) আমাদের ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে যানবাহন চলাচলে সহযোগিতা করে। বাকপ্রতিবন্ধী হলেও সে বাঁশি বাজিয়ে সড়কে যানবাহন চলাচল সচল রাখতে ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন।”