শিজক রিপোর্ট
রাঙামাটি: জেলার লংগদুতে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া দুই শিশু শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের অভিযোগে একটি মাদরাসার সহকারী শিক্ষককে আটক করেছে পুলিশ। লংগদু উপজেলার গুলশাখালী ইউনিয়নের রাজনগর মুহাম্মদিয়া জামিয়া শরিফ নামের একটি মাদরাসায় এ ঘটনা ঘটেছে।
শুক্রবার (৩ মে) রাতে অভিযুক্ত আটকের শনিবার (৪ মে) লংগদু থানায় মামলাও হয়েছে। ঢাকার রাজারবাগ দরবার শরিফ মাদরাসাটির পৃষ্ঠপোষকতা করে বলে জানা গেছে। অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের নাম মো. ফারুক আহমেদ (৭০)। ফারুক মাদরাসার বাংলা বিষয়ে শিশুদের পড়ান কয়েকবছর ধরে।
স্থানীয়রা জানায়, এর আগে ফারুক পুলিশে কর্মরত ছিলেন বলে জানায় এলাকাবাসী। এছাড়া গুলশাখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য পদে আছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা।
দুই শিশুর অভিভাবক জানান, শিক্ষক ফারুক বাগান থেকে বাঁশ আনবে বলে গত বুধবার শিশু শিক্ষার্থী আমার ভাগিনাকে বাঁশ বাগানে নিয়ে যায়। বাগানের টং ঘরে শিশুটিকে বলাৎকার করে এবং কাউকে বলতে নিষেধ করে ৫০ টাকা চকলেট খেতে দেয়। এরপর শুক্রবার আমার শিশুপুত্রকেও বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে বাঁশ বাগানের একই স্থানে গিয়ে বলাৎকার করে।”
“শিশুটি বাড়িতে ফিরে অসুস্থবোধ করলে পুরো ঘটনা জানতে পারি আমরা। এরপর আমরা স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িকে জানালে তারা শুক্রবার রাতেই অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করে।এরপর শনিবার সকালে আমরা থানায় মামলা করি । আমরা এই ভণ্ড শিক্ষকের উপযুক্ত বিচার চাই।”- যোগ করেন তিনি।
এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এর আগেও একই মাদ্রাসার অন্য কয়েকজন ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগ ওঠলে এলাকার মানুষজন স্থানীয়ভাবে সমাধান করে দেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধার্মিক মানুষের মুখোজ পড়ে সকলের অগোচরে তিনি এসব অপকর্মে লিপ্ত আছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়াদের।
ওই মাদরাসার প্রধান মাওলানা হাফিজ বলেন, “শুক্রবার আমাদের মাদরাসা বন্ধ ছিল। ফারুক স্যার আমাকে কল দিয়েছিল, তিনি বাগান থেকে কিছু বাঁশ আনবে। সেই সুবাদে মাদ্রাসার ছাত্রদের সঙ্গে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে লোক মুখে শুনি তিনি সে-ই ছাত্রদের বলাৎকার করেছে। যদি এর সত্যতা পাই তাহলে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
স্থানীয় ইউপি সদস্য গোলাম মাওলা বলেন, ‘শিশুদের পরিবার আমার কাছে আসলে উভয়পক্ষকে নিয়ে বসি। দুইপক্ষের কথা শুনে আমি তাদের আইনের আশ্রয় নিতে সহযোগিতা করি।’
গুলশাখালী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ওলি উল্লাহ জানান, ‘বিষয়টি আমাদের নজরে আসলে অভিযুক্ত ফারুক আহমদকে জিজ্ঞেসাবাদের জন্য ফাঁড়িতে নিয়ে আসি। পরে তাকে লংগদু থানায় হস্তান্তর করি।’
লংগদু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হারুনুর রশিদ জানান, ‘পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা অভিযোগ আমলে নিয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’