শিজক ডেস্ক
খাগড়াছড়ি: পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি সইয়ের পর থেকে পাহাড়ে আঞ্চলিক সংগঠনের ভাঙাগড়া ও ভ্রাতৃঘাতি সংঘাতে বহু প্রাণ হারিয়েছে, থমকে গিয়েছে চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলন; এবার জুম্ম জনগণের স্বাধিকার আদায়ে বিভেদ ভুলে দলমত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের আহ্বান জানিয়েছে জনসংহতি সমিতি (এমএন লারমা)।
বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে খাগড়াছড়িতে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি’র ৫১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা থেকে এই আহ্বান এসেছে সংগঠনটির নেতাদের থেকে। এদিন সকাল ১০টায় খাগড়াছড়ি শহরের খাগড়াপুর এলাকায় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
কর্মসূচিতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (এমএন লারমা) কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি বিভূ রঞ্জন চাকমা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক প্রণব চাকমা। পতাকা উত্তোলনের পর পার্টির নেতারা বেলুন উড়িয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদ্বোধন করেন। ৫১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর স্লোগান ছিল “পার্টির আদর্শগত ঐক্য-সংহতি ও আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার আন্দোলন জোরদার করুন”।
আরও পড়ুন: পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নে রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি
আলোচনা সভায় জনসংহতি সমিতি (এমএন লারমা) খাগড়াছড়ি সদর থানা কমিটির সভাপতি প্রত্যয় চাকমার সঞ্চালনায় সভার সভাপতিত্ব করেন জনসংহতি সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি বিভূরঞ্জন চাকমা। সভার শুরুতে জুম্ম জনগণের ‘আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার আদায়ের আন্দোলনে আত্মবলিদানকারী এমএনলারমাসহ সকল শহীদদের’ স্মরণে এক মিনিট মৌনব্রত পালন করা হয়।
এসময় বক্তব্য রাখেন জনসংহতি সমিতি খাগড়াছড়ি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সিন্ধু কুমার চাকমা, সহ-সভাপতি প্রীতি খীসা, সহ-সভাপতি শোভা কুমার চাকমা, জনসংহতি সমিতি রাঙামাটি জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সুরেশ কান্তি চাকমা, পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সুনেন্টু চাকমা; যুব সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি জ্ঞান প্রিয় চাকমা, মহিলা সমিতির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদিকা মল্লিকা চাকমাসহ আরও অনেকে। শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জনসংহতি সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য ও প্রচার সম্পাদক সুধাকর ত্রিপুরা।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরের পর হতে পার্বত্য চট্টগ্রামে চুক্তিবিরোধী শক্তি যে ধ্বংসলীলা শুরু করেছে তা জুম্ম জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে পরিহার করতে হবে। চুক্তি স্বাক্ষরের পর হতে আঞ্চলিক সংগঠনগুলোর বিভিন্ন ভাঙাগড়া ও ভ্রাতৃঘাতি সংঘাতে বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলন থমকে গিয়েছে; সে কারণে জুম্ম জনগণের অধিকার আদায়ে দলমত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনের আহ্বান জানিয়েছেন বক্তারা। (বিজ্ঞপ্তি)