শিজক ডেস্ক
রাঙামাটি: পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (পিসিজেএসএস) সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা বলেছেন, “পার্বত্য অঞ্চলে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ ছাড়াও অনেক জাতিগত ছাত্র সংগঠন রয়েছে। কিন্তু পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ কোনো নির্দিষ্ট জাতির প্রতিনিধিত্ব করে না। পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ পার্বত্য অঞ্চলের ১৩ ভাষাভাষী ১৪টি জাতিগোষ্ঠীর ছাত্র সমাজের তথা জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে।”
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ রাঙামাটি জেলা শাখার ২৪তম বার্ষিক শাখা সম্মেলন ও কাউন্সিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। রাঙামাটি সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট হলরুমে অনুষ্ঠিত সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন পিসিপি রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি মিলন কুসুম তঞ্চঙ্গ্যা।
সন্তু লারমা আরও বলেন, `পাহাড়ে শাসকগোষ্ঠীর কু-প্ররোচনায় বা বৈষম্যমূলক সমাজ ব্যবস্থার, সামন্ত-মধ্যবিত্ত শ্রেণীর চরিত্রের কারণে বিভিন্ন রাজনৈতিক বাস্তবতা ও প্রশাসনিক বিভিন্ন বঞ্চনার কারণে এখানে জাতিগত ছাত্রসংগঠনসমূহ রয়েছে। আপনারা দেখবেন যে, ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জাতিগত ছাত্র সংগঠন গড়ে উঠেছে। এটা অবশ্যই ভাবা দরকার। এটা খুবই খারাপ। কিন্তু এটা হচ্ছে বাস্তব। আমাদের সমাজের যে বাস্তবতা, আমরা যে বাস্তবতায় বসবাস করছি, সেই বাস্তবতার প্রতিফলনের হচ্ছে এগুলো। এগুলো যদি আমাদের জন্য ক্ষতিকারক হয়, জুম্ম জাতীয় ঐক্যের পথে যদি বাধা হয়, তাহলে ভালো দিক কোনটা? বর্তমান ছাত্র-যুব সমাজকে জেনে নিয়ে, বুঝে নিয়ে আমাদের ছাত্র সমাজকে দায়িত্ব পালন করে যেতে হবে এবং এই দায়িত্বটা পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের কর্মীদের ওপরই বেশি বর্তায়।’
আরও পড়ুন: পিসিপি’র রাঙামাটির নেতৃত্বে জিকো-টিকেল
তিনি বলেন, ‘পাহাড়ী ছাত্র সমিতির কার্যক্রমের মধ্য দিয়েই মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা তার যে উপস্থিতি তার যে ভূমিকা সেটা এগিয়ে নিয়ে যেতে পেরেছে। এক সময়ে পার্বত্য অঞ্চলের জনগণের স্বার্থ নিয়ে কারা কাজ করেছে, এই পাহাড়ী ছাত্র সমিতির নেতৃত্বেই ছাত্র সমাজ জুম্ম জনগণের সামগ্রিক স্বার্থ নিয়ে, উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, একটা সুন্দর জীবন প্রতিষ্ঠা করার কাজ তারা করেছে। তাদের মধ্য দিয়েই পার্বত্য চট্টগ্রামে রাজনৈতিক চেতনার বিকাশ হয়েছে এবং পরবর্তীতে তাদেরই নেতৃত্বে জুম্ম জনগণ তাদের স্বাধিকার-অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করে গেছে। আজকের তরুণ ছাত্র সমাজকে তাদের ঐতিহাসিক দায়-দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিতে হবে’
জেএসএস সভাপতি বলেন, ‘১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর জুম্ম জনগণের তাদের সর্বোচ্চ ত্যাগের মধ্যে দিয়ে যে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি সাক্ষরিত হয়েছিল, সেই চুক্তি বাস্তবায়নের পক্ষে কথা না বলার জন্য, সেই চুক্তি মানুষ যাতে ভুলতে পারে, ভুলে যেতে বাধ্য হয় এবং সেই প্রক্রিয়াই এখন পাহাড়ে চলছে। এই প্রক্রিয়াকে আজকের তরুণদের রুখে দিতে হবে এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নে বৃহত্তর আন্দোলনে ছাত্র-যুব সমাজকে সামিল হতে হবে।’
সস্মেলনে পিসিপি জেলা শাখার সহ-সাধারণ সম্পাদক টিকেল চাকমা সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সুমন মারমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের রাঙামাটি জেলা কমিটির সভাপতি ম্রানু সিং মারমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতি রাঙামাটি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুমিত্র চাকমা প্রমুখ। (বিজ্ঞপ্তি)