লোকাল করেসপনডেন্ট
কাপ্তাই: রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার বিভিন্ন বাগানে এবার লিচুর ভালো ফলন এসেছে। উপজেলার ওয়াগ্গা ইউনিয়নের সাপছড়ি, আগুনিয়াছড়া, বটতল, পাগলী পাড়া এবং কাপ্তাই ইউনিয়নের কাপ্তাই-আসামবস্তি সড়কের বেশ কিছু এলাকায় লিচু বাগান রয়েছে।
সম্প্রতি বাগান পরিদর্শন করে দেখা গিয়েছে, প্রায় প্রতিটি গাছে রসালো লিচুর দেখা মিলেছে। তবে বেশীর ভাগ গাছের লিচুই মোটামুটি পরিপক্ক হলেও এখনো কিছু গাছের লিচু কাঁচা রয়ে গেছে। চাষীরা আশা করছেন, অল্প সময়ের মধ্যে সেই লিচুগুলো পরিপক্ক হয়ে লাল রং ধারণ করবে।
কাপ্তাই উপজেলার বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকা কৃষি নির্ভর। এখনকার চাষিরা পাহাড়ে উৎপাদিত বিভিন্ন মৌসুমি ফল উৎপাদন করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। বিশেষ করে মৌসুমি ফল লিচু স্বাদে ও গন্ধে অতুলনীয়। কাপ্তাইয়ে লিচুর জাতের মধ্যে বোম্বাই, কালিপুরী, চায়না-থ্রি জাতের বেশী লিচু চাষ হয়ে থাকে। ভিটামিন-সি যুক্ত এই মৌসুমি ফলটি কমবেশী সবার কাছে জনপ্রিয়।
অপরদিকে, কাপ্তাইয়ের বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকার কৃষকেরা এই মৌসুমি ফল এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্রয় করে আসছে। ফলে কেবল মৌসুমি ফলের চাষাবাদ করেই তারা স্বাবলম্বী হচ্ছেন।
উপজেলার ৪ নম্বর কাপ্তাই ইউনিয়নের আসামবস্তি সড়কের পাশেই দীর্ঘ বছর লিচুচাষ করে আসছেন স্থানীয় বাসিন্দা সায়নুচিং মারমা। লিচুসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফলের চাষ করে ভালোই চলছে তার সংসার। বর্তমানে তার বাগানে লিচুর ব্যাপক ফলন হওয়াতে লাভবান হবে বলে আশা করছেন তিনি। এছাড়া বাগানে উৎপাদিত লিচু বাইরে গিয়ে কোথাও বিক্রয় করতে হয় না বরং দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা এসে লিচু সংগ্রহ করে। এতে তার কষ্ট হচ্ছে না বরং অনেক উপকার হচ্ছে। তবে বতর্মানে বৃষ্টিপাত অনান্য মৌসুমের তুলনায় কম হওয়াতে অনেক লিচু গাছেই নস্ট হয়ে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।
কথা হয় ওয়াগ্গা ইউনিয়নের আরেক সফল লিচু চাষী সমীরণ তঞ্চঙ্গ্যার সঙ্গে। সমীরণ জানান, লিচুর ভালো ফলন হলেও পানির সমস্যায় ভুগছেন তারা। বিশেষ করে পাহাড়ের উচুঁতে গড়ে ওঠা বাগান গুলোতে পর্যাপ্ত পরিমানে পানি দিতে পারলে ফলন আরো ভালো পাওয়া যেতো। এবছর তার বাগানের বেশ কয়েকটি গাছে লিচুর ভালো ফলন পাওয়া গেলেও অপর কিছু গাছে ভালো ফলন আসেনি। তাই বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত সে।
তবে টোফেল নামে একজন জানান, পাহাড়ের কৃষকদের যদি সরকার কর্তৃক উন্নত মানের কিছু কৃষি সরঞ্জাম দেওয়া হয় তবে অনেক উপকার হবে তাদের।
এ বিষয়ে কাপ্তাই উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মধুসূদন দে জানান, পাহাড়ি অঞ্চলের কৃষকেরা অনেক পরিশ্রমী। ভালো ফলন পাওয়ার জন্য তারা অনেক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরাও কৃষি বিভাগ থেকে সব সময় চেষ্টা করি। তাদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করার জন্য। সম্প্রতি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে কাপ্তাইয়ের বিভিন্ন চাষীদের মৌসুমি ফল চাষে উদ্বুদ্ধ ও সহযোগিতা করা হয়েছে। যার ফলে এলাকার চাহিদা মিটিয়ে উৎপাদিত এই মৌসুমি ফল দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে যাচ্ছে। এবার কা প্তাইয়ের বিভিন্ন লিচুবাগানে ভালো ফলন এসেছে। আমি মনে করি, এতে প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকরা লাভবান হচ্ছে।